ক্রীড়া ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই অসহায় মানুষের পাশে আছেন জাতীয় দলের সাবেক সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সেটা যেমন খেলোয়াড় হিসেবে তেমনি সংসদ সদস্য হিসেবেও। নড়াইলে নিজ এলাকায় নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তিনি। ক্রীড়াবিদ হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের পাশে। করোনায় দুর্গতদের আরও বেশি সহায়তা দিতে এই তো কিছুদিন আগে নিলামে তুলেন ১৮ বছরের সঙ্গী হয়ে থাকা প্রিয় ব্রেসলেটটাকে। ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটা। সেই টাকা কাজে লাগাতে শুরু করেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। মঙ্গলবার ঢাকাস্থ আবাহনী মাঠে নিলামে প্রাপ্ত সেই অর্থের একাংশ মাশরাফি উপহার দিয়েছেন বিসিবির তালিকাভুক্ত ঢাকা মেট্রো ক্রিকেট একাডেমির কোচদের। ৮২ জন কোচের প্রতিজনকে ৩ হাজার টাকা করে উপহার দেওয়া হয়। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য এক লাখ টাকা পৌঁছে দেওয়া হয় ডাকসুর কাছে।
বিভিন্ন একাডেমির এই কোচরাই বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়নের নেপথ্য কারিগর। তাদের পরিবচর্যাতেই আজকের তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের ক্রিকেটার হওয়ার ভীত গড়ে উঠেছে। মানসম্মত ক্রিকেটার তৈরিতে নিষ্ঠার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এমন নিবেদিতপ্রাণ কোচদের সম্মান জানিয়েছে মাশরাফির ‘নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কোচদের মাঝে উপহার তুলে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও নড়াইলের কৃতি সন্তান ড. কেএম সালাউদ্দিন, নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের আমিরুল ইসলাম ইকবাল, সৈয়দ সুলতান আবেদীন এবং আব্দুল্লাহ আল জাবের। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট একাডেমি কোচেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজ।
এই দুঃসময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হওয়া সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে মাশরাফি অডিও কলে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আমরা ক্লাসে ছাত্রদের পড়াই আর মাঠে ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ দেয় এই কোচেরা। ক্রিকেট মাঠের শিক্ষক যে কোচেরা, আজ তাদের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ক্রিকেটার মাশরাফি। তিনি প্রমাণ করলেন তিনি ক্রিকেট মাঠকে কতটা ধারণ করেন, ক্রিকেটের কারিগর এই কোচদের কতটা ধারণ করেন। নড়াইলের একজন সন্তান হিসেবে ভালো লাগছে এখানে উপস্থিত হতে পেরে।’
ব্রেসলেট বিক্রির ৪২ লাখ টাকার মধ্য থেকে ২৫ লাখ খরচ হবে নড়াইলের জন্য। ১৫ লাখ টাকা খরচ হবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তত্ত্ববাবধানে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে, ডাকসুর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তায়, ঢাকা শহরের ক্রিকেট কোচদের আর্থিক সহায়তায় এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও বিনামূল্যে রক্ত দাতাদের সংগঠনের উন্নয়নে।